পূর্ব-তুর্কিস্তানের ওপর সাম্রাজ্যবাদী চীনের ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের সূচনা অষ্টাদশ শতক থেকেই। কিন্তু এই ভূমির অধিবাসী উইঘুর ও অন্যান্য মধ্য-এশীয় জাতিগোষ্ঠীকে দমনের ক্ষেত্রে চীন যেন ঠিক কায়দা করে উঠতে পারছিল না। আর কাকতালীয়ভাবে চীনকে এই সুযোগটি এনে দেয় আমেরিকা। ৯/১১-পরবর্তী আমেরিকা প্রণীত ওয়ার অন টেরর মডেল লুফে নেয় চীন এবং একটা গোটা জাতিসত্তাকে তথাকথিত সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের ওপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে চীনের রাষ্ট্রযন্ত্র।
অবশ্য চীন অন্যদের মতো ‘মারমার কাটকাট’ পন্থা এড়িয়ে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে ও পদ্ধতিগত কায়দায় উইঘুর মুসলিমদের জাতিগত নিধনের প্রকল্প হাতে নেয়। সেইসব প্রকল্প কী এবং তা কতদূর অগ্রসর হয়েছে, ভবিষ্যতে আর কী কী হতে পারে তার বিস্তৃত বিবরণ উঠে এসেছে এই বইয়ে। লেখক চীনের সাথে পূর্ব-তুর্কিস্তানের দ্বন্দ্বের একেবারে সূচনাকাল থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত পুরো চিত্রটা স্পষ্ট করে তুলেছেন এবং বিশেষ করে ৯/১১-পরবর্তী সময়ে চীনের ধ্বংসাত্মক উইঘুর নীতির পেছনে আমেরিকার ওয়ার অন টেরর প্রজেক্টের যে অপরিসীম ভূমিকা, তা মোটেও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেননি।
শন রবার্টস উইঘুরদের নিয়ে প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণা করছেন এবং বহুবার তিনি পূর্ব-তুর্কিস্তান ভ্রমণ করেছেন। ফলে ভাগ্যাহত উইঘুর মুসলিমদের সম্পর্কে জানতে এই বইয়ের বিকল্প নেই বললে ভুল হবে না।
খুবই উপকারি বই সবাই নিতে পারেন।